ইসরায়েল কর্তৃক হামাস প্রধান ইহাইয়া সিনওয়ারকে হত্যার পর হামাসের ভবিষ্যৎ এবং গাজা যুদ্ধের কি হবে, এই নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
সম্প্রতি ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযান এবং হামাসের শীর্ষ নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যু নিয়ে পশ্চিমা বিশ্লেষকরা ইসরায়েল ও গাজার ভবিষ্যত রাজনীতি এবং সামরিক প্রেক্ষাপট নিয়ে জানিয়েছেন বিভিন্ন মতামত।
ইসরায়েলের জয় এবং যুদ্ধবিরতির সুযোগ
এ ব্যাপারে ইসরায়েলের প্রাক্তন কূটনীতিক ‘শালোম লিপনার’ মনে করেন, সিনওয়ারের মৃত্যু ইসরায়েলের জন্য গাজায় চলমান যুদ্ধে জয় এবং হামাসের সাথে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির দিকে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। এমনটি ঘটলে ইসরায়েল গাজায় তাদের সামরিক বাহিনীদের সরিয়ে এনে ইরানসহ অন্য যুদ্ধ ফ্রন্টগুলোর দিকে মনোনিবেশ করতে পারবে।
নেতানিয়াহুর ওপর বাড়তে পারে রাজনৈতিক চাপ
অন্যদিকে আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রাক্তন উপপ্রধান ‘জোনাথন পানিকফ’ মনে করেন সিনওয়ারের মৃত্যু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর উপর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপকে পূর্বের তুলনায় আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। অপরদিকে সিনওয়ার পরবর্তী হামাসের নেতা যদি গাজার বাইরের কেউ হন, তাহলে তিনি বন্দি বিনিময় চুক্তির দিকে সিনওয়ারের তুলনায় বেশি আগ্রহী হতে পারেন।
ইসরায়েলের কৌশলগত সমস্যার সমাধান
তবে ইসরায়েলের প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ‘দানি সিটরিনোভিচ’ মনে করেন, ইসরায়েলের বর্তমান সরকার গাজা বিষয়ে নিজেদের নীতি পরিবর্তন না করলে সিনওয়ারের মৃত্যু ইসরায়েলের কৌশলগত সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবে না। তার মতে, হামাস সিনওয়ারের মৃত্যুর পরও ভেঙে না পড়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। অন্যদিকে ইসরায়েল যদি গাজার কোন অংশ অবৈধভাবে দখল করে রাখার এবং সেখানে বসতি স্থাপনের নীতি চালিয়ে যায় তাহলে এ যুদ্ধে কোন রাজনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা থাকবে না।
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা খুবই কম
এদিকে আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র ‘ফেলো কারমেল আরবিট’ মনে করেন, নেতানিয়াহুর জন্য গাজায় তার কারণে ঘটা ঘটনাগুলো সামাল দেওয়া এবং গাজার পরবর্তী কৌশল তৈরি করা দুটোই অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সিনওয়ারের মৃত্যুতে খুব একটা নেতানিয়াহুর অবস্থান বদলাবে বলে মনে হয় না।
মোটকথা পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যায়, সিনওয়ারের মৃত্যু গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের শেষ সমাধান নয়। বরং পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে এবং যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি হলেও তা দীর্ঘমেয়াদী শান্তি নিশ্চিত করবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র : গালফ পোস্ট