মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি এবং ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগ্রামের অবিস্মরণীয় এক চরিত্রের নাম ইয়াহিয়া সিনওয়ার। সম্প্রতি সদ্য শহিদ ইয়াহিয়া সিনওয়ারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ক্যানভাসে আঁকা ঐতিহাসিক সব চিত্রকর্মের মাধ্যমে সিনওয়ারকে অমর করে রেখেছেন আরবের চিত্র শিল্পীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোও ভরে গেছে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আঁকা সেইসব চিত্রকর্মের প্রদর্শনীতে।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ছিলেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার। ছিলেন ফিলিস্তিনের মুক্তির সংগ্রামের অন্যতম প্রতীক। তিনি হচ্ছেন এমন এক হামাস প্রধান, যিনি দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর কোন গুপ্ত হামলায় নয়, বরং দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে সমানে সমানে লড়ে এক বীরত্বপূর্ণ শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করেন। কিন্তু শাহাদাত মানে তো অমরত্ব। তাই তার শাহাদাতের পর তাকে অমর করে রেখেছে আরব বিশ্বের শিল্পীদের হাতে আঁকা অসংখ্য চিত্রকর্ম। প্রতিটি ছবিতেই তাকে এমনভাবে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে , যেন সিনওয়ারের প্রতিটি লড়াইয়ের মুহূর্তের চিত্রগুলো পুরোপুরি বাস্তব।

প্রতীকী ভাষায় অমর ইয়াহিয়া সিনওয়ার
আরব চারু শিল্পীদের চিত্রকর্মগুলোতে উঠে এসেছে সিনওয়ারের সংগ্রামের বিভিন্ন প্রতীকী মুহূর্ত। কিছু ছবিতে দেখা যায়, তিনি তার বিখ্যাত লাঠি হাতে, ইসরায়েলি বাহিনীর ড্রোনকে প্রতিরোধ করছেন।
অপরদিকে আরেকটি দৃশ্যে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি কুফিয়ায় মুখ ঢেকে চেয়ারে বসে থাকা সিনওয়ার দখলদারদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য, ইয়াহিয়া সিনওয়ারের শাহাদাতের মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম ও দৃঢ়তার সাক্ষী হয়ে উঠেছে কুফিয়া আর চেয়ার। যা সেই ছবিতে বারবার ফুটে উঠেছে।

তুফানুল আকসার মহানায়ক
চিত্রকর্মগুলোয় সিনওয়ারের সাহসিকতার বর্ননার পাশাপাশি তাকে ‘তুফানুল আকসার’ মাষ্টারমাইন্ড হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নামটিই ছিল তার খ্যাতি। ফলে শহীদ হওয়ার পর, তাকে সম্মান জানাতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর নামটিই সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়েছে। সিনওয়ারের দৃঢ়তা আর প্রতিরোধের গল্প তাকে এমন এক অবস্থানে নিয়ে গেছে, যেখানে সিনওয়ার শুধুমাত্র একজন নেতাই নন, বরং ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতীক।
শ্রদ্ধা ও অনুপ্রেরণা
শিল্পীদের চিত্রকর্মগুলোয় নিছক সিনওয়ারের শাহাদাতই যে ফুটে ওঠেছে তা কিন্তু নয়। এখানে শিল্পীর তুলির প্রতিটি আঁচর একটি জাতির সংগ্রাম, একটি জাতির প্রতিরোধ এবং সিনওয়ারের জীবনের প্রতিটি অধ্যায় মুসলমানদের হৃদয়ে এক অনন্য অনুপ্রেরণায় ফুটিয়ে তুলেছে।

আর এজন্যই গত শুক্রবার হামাসের গাজা ব্যুরোর প্রধান খলিল আল-হাইয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেন , গাজার রাফাহ শহরের তেল আস সুলতান এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে সিনওয়ার শহীদ হওয়ার পর, শিল্পীরা তাঁর প্রতিরোধের শক্তিকে ক্যানভাসে ধারণ করেছেন , যা ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।
সিনওয়ারের এই সংগ্রাম ও তার সাহসিকতা তাকে চিরকাল একজন স্মরণীয় ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত করে রাখবে। সিনওয়ারের লাঠি, কুফিয়া, এবং সেই চেয়ার সবসময় তার সাহসিকতা ও বিপ্লবের কথা বলে যাবে, যা শুধু ফিলিস্তিনিদের নয়, পুরো বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করবে।
সূত্র : আল জাজিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link