তারিখ প্রদর্শন
লোগো

সম্প্রতি সামরিক খাতে ব্যয়ের কারণে বেড়ে চলা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সুদের হার ১৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে রেকর্ড ২১ শতাংশে উন্নীত করেছে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থনীতিতে ক্রমাগত বাড়তে থাকা মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে রাশিয়ার সরকারি ব্যয় বিশেষত সামরিক ব্যয় বেড়েছে বহুগুণে। অবধারিতভাবেই যার প্রভাব দেশটির স্থানীয় সেবা ও পণ্যের উৎপাদনে এসে পড়েছে। কাজের ক্ষেত্র হয়ে যাচ্ছে সীমাবদ্ধ বাড়ছে শ্রমিকদের বেতন। এহেন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাচ্ছে  সুদের হার বাড়িয়ে, ঋণের খরচ বৃদ্ধি করে অর্থনৈতিক চাহিদা হ্রাস করতে। যা দেশটির মুদ্রাস্ফীতিকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হতে পারে।

যদিও বিদেশি নিষেধাজ্ঞা এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলো রাশিয়ায় কার্যক্রম বন্ধ করার পর স্থানীয় উৎপাদদের সর্বোচ্চ উৎপাদনের কারণে ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত রাশিয়ান অর্থনীতি ৪.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং বেকারত্বের হার কমে ২.৪ শতাংশে নেমে এসেছিল। 

কিন্তু বর্তমানে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশটির মুদ্রাস্ফীতির হার ৮% থেকে ৮.৫% পর্যন্ত বাড়িয়েছে, অথচ ২০২৫ সালে মুদ্রাস্ফীতি রাশিয়ার মুদ্রাস্ফীতি মাত্র ৪.৫% থেকে ৫% পর্যন্ত অনুমান করা হয়েছিল।  

অন্যদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ব্যাপারে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৪ সালে  ৩.৫% থেকে ৪% পর্যন্ত বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিলেও, আগামী ২০২৫, ২০২৬ ও ২০২৭ সালের সামনের অর্থবছরগুলোয় আনুমানিক প্রবৃদ্ধির হার অনেকটা কমিয়ে যথাক্রমে ০.৫% থেকে ১.৫%, ১% থেকে ২% এবং ১.৫% থেকে ২.৫% নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

এদিকে বিখ্যাত পত্রিকা ব্লুমবার্গ ইকোনমিক্সের বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধির ফলে রাশিয়ার প্রবৃদ্ধি মারাত্মক কমে গেছে। শিল্প খাতের উৎপাদনও সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে, যার প্রভাব সামরিক চাহিদার বাইরের খাতগুলোর প্রবৃদ্ধিতে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে সম্প্রতি অক্সফোর্ড ইকোনমিক্সের অর্থনীতিবিদ তাতিয়ানা অরলোভা বলেন, উৎপাদন থেকে প্রবৃদ্ধির ধীরগতি রাশিয়ার উৎপাদন ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। আর এ অবস্থায় সুদের হার বাড়ানোয় নতুন বিনিয়োগও কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে।

অপরদিকে রাশিয়ার বর্তমান অর্থনীতির ব্যাপারে স্টকহোম ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদ আন্দ্রেস ওলোভগার্ড বলেছেন, ‘রাশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা আগেই কিছুটা নেতিবাচক ছিল। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে তা আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *