নিউজনেস্ট

আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশ থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার

আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশ থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার
সাবেক ফ্যাসিস্ট প্রধানমর্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বা প্রায় ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে বলে শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রতি বছর গড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়। মূলত দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলা ও আর্থিক খাতের প্রভাবশালীরা এই অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত।

শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩.৪ শতাংশ অর্থ পাচার হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের এক-পঞ্চমাংশ বিদেশে পাচার হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, দুবাই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ভারতের মতো দেশগুলোতে এসব অর্থ গৃহ, ব্যবসা ও অন্যান্য সম্পদে বিনিয়োগ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দেশের বাইরে পাচার করা হয়। ঘুষ, মিথ্যা ঘোষণা, ব্যাংক চুরি, ঋণের টাকা আত্মসাৎ, প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো এবং শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির মাধ্যমে এই অর্থ পাচার হয়েছে।

শ্বেতপত্রে ব্যাংক খাতকে ‘কৃষ্ণগহ্বর’ আখ্যা দিয়ে বলা হয়, এখানে ৬ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে। শেয়ারবাজার থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ১ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

সরকারি বিনিয়োগ থেকে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা ঘুষ হিসেবে লেনদেন হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পে অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে অর্থ লুটপাট করা হয়েছে। ৭ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার এডিপির ৪০ শতাংশ পর্যন্ত অপচয় হয়েছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

শ্বেতপত্রে বলা হয়, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা, দুর্নীতি, আইনি দায়মুক্তি এবং সুশাসনের অভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উত্তরণের জন্য ভবিষ্যৎ সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সুশাসনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে।

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি এই প্রতিবেদন তৈরি করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। কমিটির মতে, বিগত সরকারের সময়ে নীতিনির্ধারণে অলিগার্কদের প্রভাব ছিল এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে ‘ভ্যানিটি প্রকল্প’ অগ্রাধিকার পেয়েছে।

এই শ্বেতপত্রে ৩৯৭ পৃষ্ঠায় বিগত সরকারের সময়ের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে সুশাসন ও কার্যকর নীতি প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে।

ডেস্ক রিপোর্ট
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত