নিউজনেস্ট

রাশিয়া-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী থেকে সিরিয়ার তেল রিফাত মুক্ত, বইছে আনন্দের হাওয়া

রাশিয়া-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী থেকে সিরিয়ার তেল রিফাত মুক্ত, বইছে আনন্দের হাওয়া
রাশিয়া-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী থেকে সিরিয়ার তেল রিফাত মুক্ত, বইছে আনন্দের হাওয়া। ছবি : আনাদোলো এজেন্সি

সিরিয়ার তেল রিফাত শহরকে সন্ত্রাসী সংগঠন ‘পিকেকে/ওয়াইপিজি’ এর দখল থেকে মুক্ত করেছে সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি। ‘ফজর আল-হুররিয়া’ (স্বাধীনতার ভোর) নামে পরিচালিত সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে রবিবার শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা।

তেল রিফাত মুক্ত হওয়ার পর শহরে ঢুকে পড়েন সংবাদমাধ্যম ‘আনাদোলুর’ একদল সাংবাদিক। তাদের প্রতিবেদনে শহরজুড়ে আনন্দঘন পরিবেশের চিত্র উঠে এসেছে। দীর্ঘদিন পর সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ায় স্থানীয়রা মিষ্টি ও কফি বিতরণ করে স্বাধীনতা উদযাপন করেন।

তেল রিফাতের বাসিন্দা আহমদ আলিতো বলেন, ‘আট বছর পর আমি আমার বাড়িতে ফিরতে পেরেছি, এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমি চাই, সিরিয়ার প্রতিটি মানুষ এমন আনন্দ অনুভব করুক।’

মুক্তির উদযাপনে মিষ্টি বিতরণ করেন খালেদ হালাক। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের কারণে আমি আমার বাড়ি হারিয়েছিলাম। আজ সেই বাড়িতে ফিরে যাওয়ার আনন্দ অন্যরকম।’

অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ খাইর জানান, তিনি পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হতে পেরেছেন। এই উপলক্ষে তিনি কফি বানিয়ে সবাইকে পরিবেশন করেন।

সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি শহরটিকে সম্পূর্ণরূপে সন্ত্রাসমুক্ত করতে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। তেল রিফাত ছাড়াও তারা ২৪টি গ্রাম, কয়রেস ও মানাঘ বিমানবন্দর এবং জুয়ান পাহাড়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। মুক্ত এলাকাগুলোর মোট আয়তন প্রায় ৮৫০ বর্গকিলোমিটার।

২০১৬ সালে রুশ বিমান বাহিনীর সহযোগিতায় ‘পিকেকে/ওয়াইপিজি’তেল রিফাতের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর শহরের প্রায় ২.৫ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন।

শহরটি থেকে সন্ত্রাসীরা সিরিয়ার ‘অপারেশন ইউফ্রেটিস শিল্ড’ এবং ‘অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ’ এর এলাকাগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে আসছিল। তবে সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মির দ্রুত অভিযানের ফলে তাদের এই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

সিরিয়ার উত্তরের আরও কিছু অঞ্চল এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে। ২৭ নভেম্বর আলেপ্পোর পশ্চিম প্রান্তে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দ্রুত অগ্রসর হয়ে বিরোধীরা আলেপ্পো শহরের বেশ কিছু এলাকাসহ ইদলিব প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখল করে নেয়।

আলেপ্পোর ঐতিহাসিক দুর্গসহ শহরের বেশিরভাগ অংশ এবং ইদলিবের মারাত আল-নোমান ও খান শাইখুনের মতো শহর এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে।

তেল রিফাত শহরের মুক্তি সিরিয়ার উত্তরের মানুষের জন্য নতুন আশার আলো নিয়ে এসেছে। দীর্ঘদিন পর বাড়িতে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত দেখে স্থানীয়দের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে। তবে, সন্ত্রাসমুক্ত একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত