বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ২০২৪ সাল শেষ করলো একটি অসাধারণ অর্জনের মাধ্যমে। দীর্ঘ ১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল তারা। দুই ম্যাচের সিরিজে সমতা আনতে দ্বিতীয় টেস্টে ১০১ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। এ জয় শুধু সিরিজ সমতা নয়, ২০২৪ সালে দেশের বাইরে তৃতীয় টেস্ট জয় হিসেবেও ইতিহাস গড়েছে। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশকে জেতাতে মূল ভূমিকা রাখেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম এবং পেসার নাহিদ রানা। প্রথম ইনিংসে নাহিদ রানার ৫ উইকেট বাংলাদেশকে স্বল্প রানে এগিয়ে রাখে। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুল ইসলাম ৫ উইকেট নিয়ে ক্যারিবীয়দের ১৮৫ রানে গুটিয়ে দেন।
কঠিন পিচে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আক্রমণাত্মক মানসিকতা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। শাহাদাত হোসেন, সাদমান ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ এবং জাকের আলির সাহসী ব্যাটিং প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে দেয়। অধিনায়ক মেহেদি মিরাজ বলেন, “আমরা সবাইকে বলেছিলাম পজেটিভলি খেলার জন্য। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫০ রান করতে পারলে ম্যাচ আমাদের পক্ষে চলে আসবে, আর তা-ই হলো।”
নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অনুপস্থিতিতে দলের দায়িত্ব নেন মেহেদি মিরাজ। তার নেতৃত্বে প্রথমবার টেস্টে জয় পাওয়া বাংলাদেশের জন্য ছিল ঐতিহাসিক। মেহেদি বলেন, “প্রথমবার অধিনায়কত্ব করেই এ রকম জয় পাওয়া আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার। দলের সবাই যেভাবে আমাকে সমর্থন দিয়েছে, তার জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ।”
এদিকে এই ম্যাচের অন্যতম নায়ক তাইজুল ইসলাম বলেন, “দলের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরে আমি খুশি। আমরা সবাই জেতার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম এবং সেটাই পারফরম্যান্সে প্রতিফলিত হয়েছে।” অন্যদিকে তাসকিন আহমেদ এই সিরিজে ১১ উইকেট নিয়ে জয়ডেন সিলসের সঙ্গে যৌথভাবে সিরিজসেরা হন।
তাসকিন বলেন, “দীর্ঘ বিরতির পর টেস্টে ফিরে সিরিজ ড্র করতে পেরে ভালো লাগছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনেক বড় দলও লড়াই করতে হিমশিম খায়। আশা করি, ভবিষ্যতে আমরা আরও ভালো করতে পারব।”
পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পর টানা পাঁচ টেস্ট হারের দুঃসময় পেরিয়ে বাংলাদেশ এই জয় দিয়ে প্রমাণ করেছে তাদের উন্নতির ধারাবাহিকতা। এটি দলকে নতুন উদ্দীপনা এনে দেবে। এই জয় শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেটের নয়, প্রতিটা ক্রিকেটপ্রেমীর জন্য একটি গর্বের অধ্যায়।
সূত্র: ক্রিকবাজ