নিউজনেস্ট

উত্তর প্রদেশে মাদনি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিল উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন

উত্তর প্রদেশে মাদনি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিল উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন
উত্তর প্রদেশে মাদনি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিল উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন। ছবি : মুসলিম মিরর

উত্তর প্রদেশের কুশীনগর জেলার কাটার এলাকায় মাদনি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন। আজ রবিবার ৯ ফেব্রুয়ারি চালানো এই উচ্ছেদ অভিযানে পাঁচটি বুলডোজার ব্যবহার করা হয়।

রাজ্যের হিন্দুত্ববাদী কর্মীদের অভিযোগ ছিল, মসজিদটি সরকারি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছিল। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ ৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার পর প্রশাসন দ্রুত এই পদক্ষেপ নেয়।

মসজিদ ভাঙার সময় ঘটনাস্থলে বিশালসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। কুশীনগরের পুলিশ সুপার সন্তোষ মিশ্র, ডিএসপি কাসিয়া কুন্দন সিংসহ বিভিন্ন থানার পুলিশ ও বিএসএফ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে মসজিদ কমিটিকে জমির মালিকানার বৈধ নথি জমা দিতে বলা হয়েছিল। তবে তারা সঠিক দলিল উপস্থাপন করতে পারেনি বলে দাবি প্রশাসনের।

২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর, স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী কর্মীরা উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পোর্টালে অভিযোগ করেন, মাদনি মসজিদটি সরকারি জমিতে নির্মিত।

মসজিদ কমিটির দাবি, প্রায় ১৫ বছর আগে মুসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ০.৩২ একর জমি কেনা হয়েছিল। তবে জেলা প্রশাসনের জরিপে দেখা যায়, মসজিদের একটি অংশ সরকারি জমিতে পড়েছে।

এ নিয়ে প্রশাসন মসজিদ কমিটিকে বৈধ নথি জমা দিতে বলে। তবে পুরসভা রেকর্ডেও মসজিদের জমির কোনো অনুমোদিত মানচিত্র পাওয়া যায়নি। একইসঙ্গে মসজিদ কমিটিও সঠিক নথি দেখাতে ব্যর্থ হয়।

এরপর প্রশাসন তিনজন মসজিদ কমিটির সদস্যের বিরুদ্ধে সরকারি জমিকে মসজিদের সম্পত্তি দেখানোর অভিযোগে মামলা দায়ের করে।

উল্লেখ্য, দুই দশকের বেশি সময় ধরে মাদনি মসজিদ স্থানীয় মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটি শুধু নামাজ আদায়ের স্থানই ছিল না, বরং ইসলামী শিক্ষার কেন্দ্র এবং পূর্বাঞ্চলীয় উত্তর প্রদেশে তাবলিগ জামাতের আঞ্চলিক কার্যালয় হিসেবেও ব্যবহৃত হতো।

মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় স্থানীয় মুসলিমরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান টার্গেট করেই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

উত্তর প্রদেশে সরকারের ‘বুলডোজার নীতি’ নিয়ে আগেও বিতর্ক হয়েছে। রাজ্য সরকার দাবি করছে, এটি অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি টার্গেট হচ্ছে।

এই ঘটনার পর ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার ও প্রশাসনিক নীতির স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রশাসনের কড়া অবস্থানের ফলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নিউজনেস্ট ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত