সম্প্রতি ইসরায়েলি পত্রিকা মারিভের সামরিক রিপোর্টার আভি আশকেনাজি এক বিশ্লেষণে চলমান যুদ্ধফ্রন্টগুলোয় ইসরায়েলের গভীর সঙ্কটের কথা তুলে ধরেছেন। বিশ্লেষণে আশাকেনাজি বলেন, ‘ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের এই অঞ্চলের সকল যুদ্ধ ফ্রন্টে কাদায় ডুবতে শুরু করেছে। তাই এখন ইসরায়েলের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে একটি বাস্তবদর্শী পর্যালোচনা করা উচিত।’
কারণ হিসেবে আশকেনাজি বলেন, চলমান যুদ্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্ট গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তার ঘোষিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী না পেরেছে ১০১ জন ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্ত করতে আর না পেরেছে হামাসকে নির্মূল করতে। এমনকি হামাসের মাস্টারমাইন্ড ইয়াহইয়া সিনওয়ারকে পর্যন্ত হত্যা করতে পারেনি।
আশকেনাজি বলেন, গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর তিনটি দল গাজা উপত্যকায় লড়াই করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেখানে তাদের সুনির্দিষ্ট কোন লক্ষ্য নেই। অন্যদিকে লেবানন সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণ কমান্ডও কোন চূড়ান্ত পরিকল্পনা উপস্থাপন করেনি। সত্য হল, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সঠিকভাবে যুদ্ধও করতে পারেনি। মনে হচ্ছে, আমরা গাজার চোরাবালিতে ডুবে যাচ্ছি।
এদিকে লেবানন ফ্রন্টে হিজবুল্লাহর সাথে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের সম্ভাবনার উপর উদ্বেগ প্রকাশ করে আশকেনাজি বলেন, ইসরায়েল যদিও দক্ষিণ লেবাননে স্বল্প পরিসরে অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে, কিন্তু এই পরিকল্পনা অনেকাংশেই অস্পষ্ট। কারণ, হিজবুল্লাহর অব্যাহত গেরিলা কৌশল ইসরায়েলকে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে টেনে নিয়ে যেতে পারে। তাছাড়া এটা জানা কথা, হিজবুল্লাহ দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে জড়ানোর ব্যাপারে ইসরায়েলের অনাগ্রহ থেকে তারা ফায়দা হাসিল করবে।
এছাড়াও আশকেনাজি পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহর সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সপ্তাহান্তে ফিলিস্তিনের নাবলুস, জেনিন এবং তুলকারমে সংঘাত বৃদ্ধি পেয়েছে। যেকোন সময় পশ্চিম তীরও ইসরায়েলের জন্য আরেকটি শক্তিশালী যুদ্ধ ফ্রন্ট হয়ে যেতে পারে। যা ভাল কোন কিছুর ইঙ্গিত দেয় না।
অর্থনৈতিক এবং জাতীয় ক্লান্তি
সবশেষে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিয়ে আশকেনাজি বলেন, গাজা এবং লেবাননে সংঘাতের কারণে ইরানকে ইসরায়েল ‘সাপের মাথা’ হিসাবে বর্ণনা করলেও, আমেরিকার চাপ এবং তেল ও গ্যাসের সাথে যুক্ত অর্থনৈতিক স্বার্থ থাকায় ইরানের হামলার পরও ইসরায়েল পাল্টা জবাব দেয়নি।
গাজার পর ইসরায়েলের জন্য যেকোন দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ ইসরায়েলের অর্থনীতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিতে পারে। এর কারণ হচ্ছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রিজার্ভ বাহিনীর উপর নির্মিত। আর ইসরায়েলি অর্থনীতি মানব সম্পদের শ্রমের উপর নির্মিত। যা চলমান সংঘর্ষের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ইসরায়েলের চলমান এবং সম্ভাব্য ফ্রন্টগুলো পর্যালোচনা করার পর আশকেনাজি বলেন, আমরা তাই সামরিক এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে ভবিষ্যত ইসরায়েলের জন্য কি বয়ে আনে সেটা ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেওয়া যায়।
সূত্র: ইসরায়েলি প্রেসের বরাতে আল জাজিরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক#molongui-disabled-link