সুদানের দক্ষিণের নীল নদ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলের জাজিরা রাজ্যে পৃথক দুটি হামলায় অন্তত ২০ জন শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। শনিবার স্থানীয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় নাগরিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর অভিযোগ, এই হামলার পেছনে রয়েছে আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। তবে শনিবার বিকেল ৩:৫০ পর্যন্ত বাহিনীটির পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
‘নিদাউল ওস্তা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এক বিবৃতিতে জানায়, নীল নদ রাজ্যের আল-কাতিনা গ্রামে আরএসএফের হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই গুরুতর।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, আরএসএফ উত্তর নীল নদ রাজ্যের খার্তুমের দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
অন্যদিকে, ‘কনফারেন্স অফ জাজিরা’ নামে আরেকটি সংগঠন জানায়, জাজিরা রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় আবু আশার এলাকায় আরএসএফের হামলায় আটজন শহীদ এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, হামলাকারীরা আবু আশার এলাকার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় এবং নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে।
উল্লেখ্য, গত ১১ জানুয়ারি, সুদানের সেনাবাহিনী জাজিরা রাজ্যের রাজধানী ওয়াদ মাদানি শহরের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে শহরটি আরএসএফের দখলে ছিল। সেনাবাহিনী একইসঙ্গে তামবুল শহরসহ পূর্ব জাজিরার বেশিরভাগ অংশ পুনরুদ্ধার করেছে।
এর আগে, গত বছরের ২০ অক্টোবর জাজিরায় সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে নতুন সংঘর্ষ শুরু হয়। এর পেছনে ছিল আরএসএফের স্থানীয় কমান্ডার আবু আকিলা কিকিলের বিদ্রোহ। আর এই বিদ্রোহ ঘটে তিনি আরএসএফ ছেড়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার কারণে।
বর্তমানে আরএসএফ জাজিরার উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকাসহ হাসাহিসা ও কামালিন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তবে সেনাবাহিনী রাজধানী ওয়াদ মাদানি এবং জাজিরার পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে চলমান যুদ্ধ দেশটিকে ভয়াবহ সংকটে ফেলেছে। জাতিসংঘ ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সংঘর্ষে ২০ হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ শরণার্থী বা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
এদিকে, মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর এক বিশ্লেষণে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজারের কাছাকাছি বলে দাবি করা হয়েছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি