সুদানের সেনাবাহিনী উত্তর খার্তুমের জেলি শহরে অবস্থিত তেল শোধনাগার ও এর আশপাশের এলাকা পুনর্দখল করেছে। কয়েক দিনের তীব্র লড়াইয়ের পর সেনাবাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর দখল থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মুক্ত করেছে সুদানের সেনাবাহিনী।
সুদানের সামরিক সূত্র জানিয়েছে, সেনাবাহিনী জেলি শহরের তেল শোধনাগার, সামরিক উৎপাদন কেন্দ্র এবং নিরাপত্তা সংস্থার অফিসগুলো দখল করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া আরএসএফের সদস্যদের শোধনাগার থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনী।
সেনাসদস্যদের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, তারা শোধনাগার এলাকায় প্রবেশ করে তাদের অবস্থান সুসংহত করছে।
উল্লেখ্য, জেলি তেল শোধনাগার সুদানের প্রধান তেল শোধনাগার হিসেবে বিবেচিত। এটি খার্তুম থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। ২০২৩ সালের এপ্রিলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এটি বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
জেলি শহরে গত কয়েক দিন ধরে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছিল। আরএসএফ এখানে নিজেদের শেষ ঘাঁটি হিসেবে অবস্থান করছিল। ফলে সেনাবাহিনী কর্তৃক এই এলাকার পুনর্দখল আরএসএফকে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
সেনাবাহিনীর সামরিক প্রচারমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সেনাপ্রধান ও সার্বভৌম পরিষদের প্রধান আবদুল ফাত্তাহ আল-বুরহান জেলি শহরের যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি সুদানের সেনাবাহিনী খার্তুমের বিভিন্ন এলাকায়ও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। সামরিক সূত্র জানিয়েছে, সেনাবাহিনী আরএসএফের দীর্ঘদিনের অবরোধ ভেঙে প্রধান সেনা সদর দপ্তর মুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া খার্তুমের উত্তর অংশে অবস্থিত সিগন্যাল কোরের ঘাঁটিও সেনাবাহিনী মুক্ত করেছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, এই যুদ্ধের ফলে সুদানে ২০ হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। এছাড়া ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তবে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি গবেষণা বলছে, শহীদদের সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সুদানের ক্রমবর্ধমান সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যা দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে এমন যেকোনো পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সকলকে সুদানের বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর পথ নিশ্চিত করা উচিত।
সূত্র: আল জাজিরা