নিউজনেস্ট

লুনার নিউ ইয়ার উদযাপনে উইঘুর মুসলিমদের বাধ্য করছে চীন

লুনার নিউ ইয়ার উদযাপনে উইঘুর মুসলিমদের বাধ্য করছে চীন
লুনার নিউ ইয়ার উদযাপনে নৃত্য। ছবি : সংগৃহীত

চীন আবারও পূর্ব তুর্কিস্তানের উইঘুরদের জোরপূর্বক চীনা লুনার নববর্ষ উদযাপনে বাধ্য করেছে। দীর্ঘদিন ধরেই দেশটি উইঘুরদের ওপর সাংস্কৃতিক একীকরণের নীতি প্রয়োগ করছে। এবারও সেই নীতির অংশ হিসেবে তাদের চীনা ঐতিহ্যবাহী উৎসব পালনে বাধ্য করা হয়েছে।

একদিকে উইঘুরদের নিজস্ব ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব পালনে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে, অন্যদিকে বিভিন্ন উপায়ে তাদের দিয়ে চীনা উৎসব পালন করানো হচ্ছে।

তিয়ানশান ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৭ জানুয়ারি কোরলা শহরের সাংস্কৃতিক প্রাসাদে একটি বিশাল সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। ‘প্রত্যেক পরিবারে সংস্কৃতি পৌঁছে দাও এবং একসঙ্গে বসন্ত উৎসব উদযাপন করো’—এই স্লোগানে আয়োজিত অনুষ্ঠানের পেছনে ছিল বায়িংগোলিন সাহিত্য ও শিল্প সংস্থা এবং কোরলা শহরের পার্টি কমিটির প্রচার বিভাগ।

পূর্ব তুর্কিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে এমন আয়োজন বাধ্যতামূলক করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোটান প্রিফেকচারের লাইকা শহরের সংগঠন বিভাগ উইঘুরদের একত্রিত করে তাদের দিয়ে লণ্ঠন টাঙানো, চীনা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরানো এবং রাস্তার মধ্যে উৎসবের স্লোগান দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এমনকি তাদের দিয়ে ড্রাগন নৃত্য, ছাতা নৃত্য ও সিংহ নৃত্যের মতো অপসংস্কৃতিও করানো হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, গ্রাম পর্যায়ের চীনা কর্মকর্তারা উইঘুর পুরুষদের দিয়ে চীনা ঐতিহ্যবাহী নাচ করিয়েছেন।

অন্যদিকে, উইঘুর মানবাধিকার কর্মী জামিরা দাউত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখিয়েছেন, কীভাবে একদল উইঘুরকে চীনা পুরাণের দেব-দেবীর পোশাক পরিয়ে রাস্তায় শোভাযাত্রায় অংশ নিতে বাধ্য করা হয়েছে।

ঐতিহাসিকভাবে উইঘুররা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও জাতীয় উৎসব উদযাপনে অভ্যস্ত। কিন্তু চীনা সরকারের দমন-পীড়নের কারণে তারা নিজেদের উৎসব থেকে বঞ্চিত রয়েছে। বরং তাদের বাধ্য করা হচ্ছে এমন সব উৎসব পালনে, যা তাদের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।

চীন পূর্ব তুর্কিস্তানে তার সাংস্কৃতিক একীকরণ নীতি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করছে। যারা চীনা সংস্কৃতির চাপ মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়, তাদের ‘চরমপন্থা’ ও ‘বিচ্ছিন্নতাবাদ’-এর অভিযোগে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, চীনের এই জোরপূর্বক সংস্কৃতি পরিবর্তনের নীতি উইঘুরদের ধর্ম, সংস্কৃতি ও স্বতন্ত্র পরিচয় মুছে ফেলারই একটি অংশ।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত