গতকাল শনিবার ১ ফেব্রুয়ারী সুদানের সেনাবাহিনী দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় আল জাজিরা রাজ্যের হাসাহিসা ও রুফা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
সেনাবাহিনীর ময়দানি কমান্ডার কর্নেল আল আবাদি আত তাহের এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, ‘আজ আমাদের বাহিনী এবং আবু আকিলা কিকেলের নেতৃত্বাধীন সুদানের প্রতিরক্ষা বাহিনী রুফা ও হাসাহিসা শহর মুক্ত করেছে।’ এই ভিডিওটি সেনাবাহিনী তাদের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেছে।
সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হাসাহিসা ও রুফা অঞ্চলে সেনাবাহিনী এবং সুদানের প্রতিরক্ষা বাহিনী এগিয়ে যাচ্ছে। তারা র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) মিলিশিয়াদের বড় ধরনের ক্ষতি করেছে। পাশাপাশি তারা শত্রুপক্ষের পালিয়ে যাওয়া সদস্যদের পেছন পেছন তাড়া করে চলছে।’
এই নিয়ন্ত্রণের ফলে সেনাবাহিনী আল জাজিরা রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হাসাহিসা এবং পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর রুফার ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। হাসাহিসা রাজ্যেটি রাজধানী ওয়াদ মাদানির ৫৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
তবে সন্ধ্যা ৬:৩০ (গ্রিনিচ সময়) পর্যন্ত আরএসএফ বাহিনীর পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীর এই দাবি নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে ১১ জানুয়ারি সেনাবাহিনী ওয়াদ মাদানি শহর দখল করে নেয়। প্রায় এক বছর আগে শহরটি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছিল। পরে আরএসএফ প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো (হেমেদতি) এক অডিও বার্তায় ওয়াদ মাদানির নিয়ন্ত্রণ হারানোর কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি এটিকে সাময়িক ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, ‘এটি শুধু একটি লড়াইয়ের পরাজয়, পুরো যুদ্ধের পরাজয় নয়।’
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর থেকে আল জাজিরা রাজ্যে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ নতুন করে শুরু হয়। এর পেছনে প্রধান কারণ ছিল আবু আকিলা কিকেলের সেনাবাহিনীতে যোগদান। তিনি পূর্বে আরএসএফ বাহিনীর সদস্য ছিলেন।
বর্তমানে, আরএসএফ বাহিনী রাজ্যের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তাদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। অন্যদিকে সুদানের সেনাবাহিনী রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে, যার মধ্যে ওয়াদ মাদানি, মানাকিল, উম কুরা এবং দক্ষিণ-পূর্বে সন্নিহিত সন্নার রাজ্যের সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ চলছে। জাতিসংঘ ও স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘর্ষে ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তবে আমেরিকার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় নিহতের সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি