মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের মংডু ও বুথিডাংয়ে রোহিঙ্গাদের সম্পত্তি দখল করে নিজেদের সমর্থক ও মিত্র গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিচ্ছে সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান আর্মি। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আরাকান সংবাদ সংস্থা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর মংডু ও বুথিডাং শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লাল চিহ্ন এঁকে দখল করতে শুরু করে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি। এসব চিহ্ন রীতিমতো—সম্পত্তি এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে, এই কথার সংকেত।
বর্তমানে ওই দখল করা বাড়িঘর ও দোকানপাট তুলে দেওয়া হচ্ছে সংগঠনের অনুগত রাখাইন, হিন্দু, কুমি ও মারু জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে। এ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মুসলিমগণ সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ হয়ে পড়ছেন।
মংডুর এক বাসিন্দা আরাকান সংবাদ সংস্থাকে জানান, ‘মংডুর কেন্দ্রস্থলে রোহিঙ্গা এক গোল্ডেন ব্যবসায়ীর বিশাল ভবন ছিল। এখন সেটি আরাকান আর্মির এক সমর্থক দখল করে রেখেছে।’
শুধু সম্পত্তি দখল নয়, বুথিডাংয়ে রোহিঙ্গাদের উন্নত গ্রামগুলোতেও নতুন করে অন্য জাতিগোষ্ঠীর লোকজনকে বসতি গড়ে দিতে শুরু করেছে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি। যেসব গ্রাম সরাসরি সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, সেখান থেকেও রোহিঙ্গা পরিবারগুলোকে জোরপূর্বক সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র বলছে, বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের কোনো সরকারি শিবিরে স্থানান্তর করা হয়নি। তারা পাশের গ্রামগুলোতে মানবেতর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। অধিকাংশই স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাহায্যের ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর মংডুর দখল নেওয়ার পর থেকেই আরাকান আর্মি ধারাবাহিকভাবে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে আসছে। বাড়িঘর বন্ধ করে দেওয়া, মূল্যবান সম্পদ বাজেয়াপ্ত, মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার, জোরপূর্বক গ্রামছাড়া—এসব পদ্ধতিতে রোহিঙ্গাদের দমন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা দোকানিদের ওপর দ্বিগুণ কর আরোপ করা হয়েছে।
বুথিডাংয়েও একই চিত্র। অনেক রোহিঙ্গাকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্য বলে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অপহরণ ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের জমি ও বাড়ি দখল করা হয়েছে। এমনকি কয়েকটি গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।
স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, সংঘাতপূর্ণ এলাকায় আরাকান আর্মির এ ধরনের কর্মকাণ্ড রোহিঙ্গাদের ফেরার পথ আরও অনিশ্চিত করে তুলছে।
সূত্র: এএনএ
উপমহাদেশ ডেস্ক
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link