রাশিয়ার মুসলিম দীনী পরিষদের প্রধান শাইখ রাভি আইনেদিন সম্প্রতি বহুবিবাহ সম্পর্কিত একটি ফতোয়া নিয়ে তার মতামত প্রকাশ করেছেন। গতকাল শনিবার তিনি বলেন, এই ফতোয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো নারীদের এবং শিশুদের অধিকার রক্ষা করা।
তিনি আরও বলেন, এটি বেসামরিক আইন বা রাষ্ট্র কর্তৃক নিবন্ধিত বিয়ের ক্ষেত্রে কোন হস্তক্ষেপ নয়। বরং এটি একটি দীনী বিয়ে, যা মুসলিম সমাজের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং পুরোপুরি ইসলামী আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। এমন বিয়ে থেকে জন্ম নেওয়া শিশুদের পিতারা তাদের সমস্ত দায়িত্ব পালন করবেন—আমরা এ বিষয়ে জোর দিচ্ছি।
শাইখ রাভি উল্লেখ করেন, ‘ধর্মীয় অজ্ঞতার কারণে অনেকেই বহুবিবাহকে কেবল ভোগ-বিলাসের উপায় হিসেবে দেখছেন। তারা বুঝতে পারেন না, বহুবিবাহ মানে আরও একটি পূর্ণাঙ্গ পরিবার গঠন করা, যা অনেক দায়িত্ব বহন করে।’
একাধিক বিবাহের জন্য শর্ত
রাশিয়ার মুসলিম দীনী পরিষদের অধীনস্থ কাউন্সিল অফ স্কলার্স গত বৃহস্পতিবার বহুবিবাহের জন্য কিছু শর্ত নির্ধারণ করেছে। পরিষদের ‘রাশিয়ার মুসলিম সমাজে বহুবিবাহের সমস্যা’ শীর্ষক ফতোয়ায় বলা হয়েছে:
১. বহুবিবাহের মূল শর্ত হলো স্বামীর পক্ষ থেকে সব স্ত্রীর প্রতি সমান আচরণ এবং ন্যায়বিচার।
২. প্রতিটি স্ত্রীর জন্য সমান আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে।
৩. প্রত্যেক স্ত্রীর জন্য পৃথক বাসস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
৪. সময়ের সুষ্ঠু বন্টন করতে হবে।
এছাড়া একজন পুরুষ তার প্রথম স্ত্রীর প্রজনন ক্ষমতা হারানো বা সন্তান জন্মদানে অনিচ্ছার মতো কারণ হলে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবেন। তবে দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে প্রথম বিয়ের বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে।
ফতোয়ায় আরও বলা হয়েছে, যদি নতুন স্ত্রী আগের বিয়ে সম্পর্কে জানেন না এবং তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান, তবে তিনি বিয়ে বাতিল করার অধিকার রাখেন।
রাশিয়ায় মুসলিম সমাজে বহুবিবাহ একটি বিতর্কিত বিষয় হলেও এই ফতোয়া নারীর অধিকার এবং পারিবারিক দায়িত্ব পালনের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে।
সূত্র: আরটি অ্যারাবিক