আরাকান রাজ্যের বুথিডাং শহরে নতুন করে দুঃসময়ের মুখোমুখি হয়েছেন রোহিঙ্গারা। সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আরাকান আর্মি’ রোহিঙ্গাদেরকে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছে, অন্তত ১০টি গ্রাম খালি করে তাদের অন্য কোথাও চলে যেতে হবে।
গতকাল রোববার ২০ এপ্রিল আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগে গত মার্চ মাসে রমজান চলাকালীন সময়েও একই ধরনের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে তখন রোহিঙ্গারা সময় চেয়ে আদেশ কার্যকর স্থগিত করেছিল। এবার তাদের আর কোনো সময় দেওয়া হয়নি। একেবারে ‘চূড়ান্ত নির্দেশ’ দেওয়া হয়েছে।
খালি করতে বলা হয়েছে যে ১০টি গ্রাম:
মি চুং জায়, হপাউ তাউ আর লি, বো জি চুং, দার বাইং সার ইয়ার, মাউন জি টং, চু বো, কি নুকি থি, মিয়েত নার, জার তি পিয়েন এবং পিল টং।
আরাকান আর্মির বক্তব্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গারা যেন ‘যেখানে পারো সেখানে চলে যাও’ নীতিতে চলে যায়। সেটা পরিত্যক্ত খেত হোক বা জনমানবহীন এলাকা। কোনো ঘরবাড়ি বা জীবনধারণের সুযোগ থাকুক না থাকুক।
এই ঘোষণার পর আতঙ্কে অন্তত ১৫টি রোহিঙ্গা পরিবার পালিয়ে এসেছে বাংলাদেশে। এছাড়া শুধুমাত্র সীমান্ত পার হওয়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য প্রত্যেক পরিবারকে প্রায় ২০ লাখ মিয়ানমারি কিয়াত (৪৪৯ মার্কিন ডলার) ঘুষ দিতে হয়েছে আরাকান আর্মিকে।
গত মার্চেও বুথিডাং অঞ্চলের বহু রোহিঙ্গাকে গ্রাম ছেড়ে খোলা মাঠে কিংবা অন্য গ্রামে গিয়ে বসবাস করতে বাধ্য করেছিল সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি। শুধু তাই নয়, তাদের ফাঁকা করে যাওয়া ঘরবাড়িতে এনে বসানো হয় বৌদ্ধ রাখাইন সম্প্রদায়ের পরিবারদের।
উল্লেখ্য, সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি বর্তমানে রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত তিনটি বড় শহর— মংডু, বুথিডাং ও রাথিডাং—সম্পূর্ণভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণে। এইসব এলাকায় রোহিঙ্গারা প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছেন। ঘরছাড়া, ঘরবাড়ি পোড়ানো, পুনর্বাসন থেকে বঞ্চিত হওয়া যেন এখন তাদের জন্য নিত্যদিনের ঘটনা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নিপীড়নের মাত্রাকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে ধীরে ধীরে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোকে সম্পূর্ণভাবে রাখাইনদের বসতিতে পরিণত করার চেষ্টা করছে আরাকান আর্মি।
এই মুহূর্তে বুথিডাংয়ের হাজার হাজার রোহিঙ্গা মানবেতর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। সামনে কী অপেক্ষা করছে, তা কেউই জানেন না।
সূত্র: এএনএ
উপমহাদেশ ডেস্ক
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link
- উপমহাদেশ ডেস্ক#molongui-disabled-link