শরীরে পানি জমার (ওডেমা) কারণ হতে পারে বিভিন্ন ধরনের রোগ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হৃদরোগ, কিডনি ও লিভারের সমস্যা, এমনকি হরমোনজনিত অসুস্থতাগুলোও এ সমস্যার জন্য দায়ী। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিরও কারণ হতে পারে।
হার্ট ফেইলিউর
বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাশিয়ার বিখ্যাত ডাক্তার প্রফেসর ওলগা শারখন বলেন, ‘হৃদরোগজনিত ব্যর্থতা (হার্ট ফেইলিউর) পানি জমার অন্যতম সাধারণ কারণ। এতে হৃদপিণ্ড রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা হারায়, ফলে শরীরের বিভিন্ন টিস্যুতে তরল জমতে থাকে।’
কিডনির সমস্যা
তবে কেবল হৃদরোগই নয়, কিডনির সমস্যাও এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি অকার্যকারিতা এবং গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিসের মতো সমস্যায় কিডনি অতিরিক্ত পানি ও বিষাক্ত পদার্থ বের করতে পারে না। ফলে শরীরে তরল জমে যায়।
লিভারের অসুস্থতা
লিভারের অসুস্থতাও এ সমস্যা বাড়াতে পারে। প্রফেসর শারখন বলেন, ‘লিভারের রোগ, বিশেষ করে সিরোসিস, প্রোটিন তৈরির প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায়। একই সাথে রক্তনালীর স্বাভাবিক চাপের ভারসাম্য নষ্ট হয়, যার ফলে শরীরে ফোলাভাব এবং পেটের গহ্বরে পানি জমতে পারে।’
এছাড়া অন্তঃস্রাবী গ্রন্থির কিছু সমস্যা, যেমন থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি (হাইপোথাইরয়ডিজম) এবং কুশিং সিনড্রোম (কর্টিসল হরমোনের উচ্চ মাত্রা), শরীরে পানি জমার কারণ হতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগ
দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগও এই সমস্যাকে তীব্রতর করতে পারে। ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) ফুসফুসের কার্যকারিতা ব্যাহত করে, যা পরোক্ষভাবে হৃদপিণ্ডের ডান পাশের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে এবং শরীরে পানি জমায়। পাশাপাশি কিছু সংক্রমণ ও টিউমার, যা লসিকানালীগুলো বন্ধ করে দেয়, এটিও এই সমস্যার কারণ হতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
প্রফেসর শারখনের মতে, পানি জমা প্রতিরোধে কিছু সহজ পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। শারীরিক কার্যক্রম বাড়ানো, নিয়মিত হাঁটাহাঁটি বা হালকা ব্যায়াম করা রক্ত সঞ্চালন ও লসিকা নিঃসরণ প্রক্রিয়া উন্নত করে। পাশাপাশি লবণ কম খাওয়া এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল বের করতে সাহায্য করে।
সূত্র: ইজভেস্তিয়া পত্রিকা
স্বাস্থ্য ডেস্ক
- স্বাস্থ্য ডেস্ক#molongui-disabled-link
- স্বাস্থ্য ডেস্ক#molongui-disabled-link
- স্বাস্থ্য ডেস্ক#molongui-disabled-link
- স্বাস্থ্য ডেস্ক#molongui-disabled-link