নিউজনেস্ট

আন্দোলনে উত্তাল তেলআবিব, রিজার্ভ ফোর্স প্রত্যাহার শুরু

আন্দোলনে উত্তাল তেলআবিব, রিজার্ভ ফোর্স ছাঁটাই শুরু
আন্দোলনে উত্তাল তেলআবিব, রিজার্ভ ফোর্স ছাঁটাই শুরু। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং বন্দিদের মুক্তির দাবিতে ইসরায়েলে প্রতিবাদের ঢেউ ক্রমেই তীব্র হয়ে উঠছে। দেশটির শীর্ষ দৈনিক হারেৎজ জানিয়েছে, মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে এই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে এক লাখেরও বেশি মানুষ অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন।

প্রতিবাদ ও অসন্তোষের জেরে রিজার্ভ সেনাদের মধ্যে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা সরকারিভাবে প্রকাশিত তথ্যের চেয়েও অনেক গভীর—এমনটাই দাবি করেছে পত্রিকাটি।

এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে রিজার্ভ ফোর্সের উপস্থিতি কমিয়ে আনছে। নতুন করে রিজার্ভ সেনাদের ডাক পাঠানোর প্রক্রিয়াও সীমিত করা হচ্ছে।

সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, যেসব রিজার্ভ সেনা যুদ্ধ বিরোধী পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন, রাজনৈতিক মহলের চাপে তাদের সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত এসেছে। তবে সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ধারণা, এই সিদ্ধান্ত উল্টো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কিছু সামরিক কর্মকর্তার মতে, রিজার্ভ সেনাদের মধ্যে দায়িত্বের প্রতি আস্থা না থাকলে তা সামরিক পরিকল্পনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ফলে রিজার্ভ ফোর্সের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে গাজায় নতুন করে নিয়মিত সেনা ইউনিট মোতায়েন করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তবে জানা গেছে, এসব ইউনিটও নানা কারণে আদেশ মানতে দ্বিধা প্রকাশ করছে।

এ অবস্থায় সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে মতপার্থক্য নিয়ে সতর্ক করেছেন সেনাপ্রধান ইয়াল জামির। তিনি বলেন, রিজার্ভ সেনাদের নাগরিক জীবনে মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। তবে তা যেন দায়িত্বমুক্ত অবস্থায় ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয়।

তিনি কড়া ভাষায় জানান, কেউ যদি সামরিক ইউনিটের নামে কথা বলে বা সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক বিরোধে টেনে আনার চেষ্টা করে, তা কখনোই বরদাশত করা হবে না।

জামির বলেন, ‘গাজায় চলমান অভিযানের মূল লক্ষ্য হলো, ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বন্দিদের ফিরিয়ে আনা এবং হামাসকে পরাজিত করা।’

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েল প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনা নিয়োগ দেয়। তুরস্কভিত্তিক আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক কয়েক দিনে ইসরায়েলের সামরিক, গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার অন্তত ৬ হাজার ৩৭ জন সদস্য ১৭টি পৃথক পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। তাদের মতে, বন্দিদের মুক্ত করতে হলেও যুদ্ধ বন্ধ করা উচিত।

এ ছাড়া বেসামরিক বিভিন্ন পেশার ২২ হাজার ৫০০ নাগরিক ১০টি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে দাবি করা হয়েছে—প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ব্যক্তিগত রাজনৈতিক স্বার্থে এই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন, যা জাতীয় নিরাপত্তার প্রয়োজনে নয়।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত