নিউজনেস্ট

সুদানের উত্তর দারফুরে দুই সপ্তাহে ৪৮০ বেসামরিক নাগরিক শহিদ: জাতিসংঘ

সুদানের উত্তর দারফুরে দুই সপ্তাহে ৪৮০ বেসামরিক মানুষ নিহত: জাতিসংঘ
সুদানের উত্তর দারফুরে দুই সপ্তাহে ৪৮০ বেসামরিক মানুষ নিহত: জাতিসংঘ। ছবি : আল জাজিরা

জাতিসংঘ জানিয়েছে, সুদানের উত্তর দারফুরে চলমান সহিংসতায় মাত্র দুই সপ্তাহে ৪৮০ জনের বেশি বেসামরিক মানুষ শহিদ হয়েছেন। এর মধ্যে কিছু হামলা ছিল জাতিগত বিদ্বেষপ্রসূত। একইসঙ্গে ওই এলাকায় ভয়াবহ যৌন সহিংসতার খবরও মিলেছে। যার শিকার হয়েছেন শিশু-কিশোরও।

জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতর গতকাল শুক্রবার ২৫শে এপ্রিল জানিয়েছে, ১০ এপ্রিল থেকে অন্তত ৪৮১ জন শহিদ হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন ক্যাম্পে গণহত্যা, ধর্ষণ ও জাতিগত হামলা

সম্প্রতি সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাগুলোর একটি হয় ১১ থেকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে জমজম উদ্বাস্তু শিবিরে। সেখানে ২১০ জন শহিদ হন। যাদের মধ্যে ৯ জন চিকিৎসাকর্মীও ছিলেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় নারীদের পাশাপাশি কিশোর-কিশোরীদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের খবরও মিলেছে।

তিনি বলেন, ‘সুদানি জনগণের এই দুর্ভোগ কল্পনাতীত। যা সহজেই বোধগম্য করা যাবে না। তবে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’

শুধু জমজম নয়, চলতি সপ্তাহে রবিবার থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে এল-ফাশের শহর, উম কেদাদা জেলা ও আবু শৌক উদ্বাস্তু শিবিরে আরও ১২৯ জন শহিদ হন। এসব হামলার অনেকগুলো ছিল জাতিগত উদ্দেশ্যপ্রসূত—যেখানে নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

এছাড়া সন্ত্রাসী RSF নিয়ন্ত্রিত অবরুদ্ধ কেন্দ্রে খাবার, পানি ও চিকিৎসার অভাবে বহু মানুষের মৃত্যুর খবরও দিয়েছে জাতিসংঘ। অনেকে আবার সহিংসতা থেকে পালাতে গিয়ে দিনের পর দিন হাঁটতে হাঁটতে প্রাণ হারিয়েছেন।

মানবিক সহায়তা মুখ থুবড়ে পড়ছে

জাতিসংঘ জানিয়েছে, উত্তর দারফুরে সংঘর্ষে কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যাদের অনেকেই এর আগেও বারবার পালিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। তবে তাদের জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানিয়েছে, অর্থসংকটের কারণে তারা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই খাদ্য সহায়তা কমাতে বাধ্য হতে পারে। বর্তমানে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে থাকা এলাকাগুলোতে রেশন ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মানবিক কর্মী ও চিকিৎসা সেবাদাতারাও হামলার শিকার হচ্ছেন বলে সতর্ক করেছেন টার্ক। তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্ত সহায়তা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। এমনকি পানির উৎসগুলোও ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছে।’

জাতিগত নির্মূলের লক্ষণ

ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দারফুরের সহিংসতা ‘জাতিগত নির্মূলের স্পষ্ট লক্ষণ বহন করে’ এবং এটি মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে। তিনি সুদানের সেনাবাহিনী ও RSF-এর প্রতি অবিলম্বে সংঘর্ষ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত