প্রতিষ্ঠাকাল
বর্তমান বিশ্বের সবচে’ শক্তিধর সশস্ত্র সংগঠন লেবাননের শিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহ। ইরানের ধর্মীয় নেতা খোমেনির ছাত্র ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয় মুসা সদরের প্রতিষ্ঠিত ‘হরকতে আমাল’ নামে শিয়া সশস্ত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ১৯৮২ সালে ইরান হিজবুল্লাহ গঠন করে। তবে সংগঠনটির রাজনৈতিক কার্যক্রম ১৯৮৫ সালে শুরু হয়।
মতাদর্শ
হিজবুল্লাহ তার সূচনা থেকেই শিয়া আদর্শকে গ্রহণ করে। এবং হিজবুল্লাহ প্রকাশ্যে আসার পর পরই তাদের একমাত্র ধর্মীয় গুরু হিসেবে ইরানের ধর্মীয় সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনিকে আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি দেয়।
হিজবুল্লাহর সামরিক সক্ষমতা
হিজবুল্লাহকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অ-রাষ্ট্রীয় সামরিক বাহিনী হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এমনকি সংগঠনটি তাদের নিজ দেশ লেবাননের রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনীর চেয়েও শক্তিশালী। ২০১৭ সালে প্রকাশিত এক সামরিক তথ্য মতে, হিজবুল্লাহর ২৫ হাজারের বেশি এক্টিভ যোদ্ধা রয়েছে। পাশাপাশি পুরো বছরব্যাপী ৩০ হাজারের মতো রিজার্ভ হিজবুল্লাহর কাছে প্রস্তুত থাকে।
উল্লেখ্য, এই সকল যোদ্ধাদের ইরানের ইসলামী বিপ্লবি গার্ড কর্পস দ্বারা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং এই সংগঠনের অনেক কিছুতে ইরান সরকার অর্থায়ন করে।
ইসরায়েলের মুখোমুখি
মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা প্রভাবের প্রচণ্ড বিরোধিতাকারী এবং ইসরায়েলি বাহিনীকে কয়েক বার পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণ করানো দলটির নাম হিজবুল্লাহ। বিশেষ করে ১৯৮২ সালে ইসরায়েল বৈরুত আক্রমণের পর ঐ অঞ্চলে নিজেদের উপস্থিতির সরব জানান দেয় হিজবুল্লাহ। এবং ২০০০ সালে দক্ষিণ থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের পর দলটি তার অবস্থান আরও শক্তিশালী করে।
২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর লেবাননের হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনের সমর্থনে ইসরায়েলের সাথে নতুনভাবে সংঘর্ষে জরিয়ে পড়ে।
২০২৪ এর ১৭ই সেপ্টেম্বর ইসরায়েল হিজবুল্লাকে টার্গেট করে ৫,০০০ পেজার (যোগাযোগ যন্ত্র) ডিভাইসে বিস্ফোরণ ঘটায়। ফলে শত শত হিজবুল্লাহ সদস্য এবং সাধারণ লেবানিজ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ এর ২৮শে সেপ্টেম্বর হিজবুল্লাহর সদর দফতর লক্ষ্য করে চালানো এক শক্তিশালী বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ’সহ অনেককেই হত্যা করে ইসরায়েল।
উল্লেখ্য, হিজবুল্লাহর প্রধান হিসেবে ১৯৯২ থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বরের আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন হাসান নাসরুল্লাহ। জ্বালাময়ী বক্তৃতার কারণে নিজ অনুসারীদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল হাসান নাসরুল্লাহর।
সূত্র: আল মুজতামা