নিউজনেস্ট

প্রাণীদের ভাষা বুঝতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

প্রাণীদের ভাষা বুঝতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
প্রাণীদের ভাষা বুঝতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ছবি: এআই

মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে ভাষার ব্যবধান কমাতে গবেষকরা কাজ করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেল তৈরি করা হয়েছে, যা প্রাণীদের যোগাযোগের ভাষা বুঝতে সহায়তা করতে পারে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এআই একদিন প্রাণীদের কথা মানব ভাষায় রূপান্তর করতে সক্ষম হবে।

ন্যাচারএলএম: প্রাণীদের ভাষা শনাক্তকারী এআই

আর্থ স্পিসিজ প্রজেক্ট নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ন্যাচারএলএম (NatureLM) নামে একটি এআই ভাষা মডেল তৈরি করেছে। এটি প্রাণীদের প্রজাতি শনাক্ত করার পাশাপাশি তাদের বয়স, বিপদের সংকেত বা খেলাধুলার বার্তা চিহ্নিত করতে সক্ষম।

ন্যাচারএলএম এমন প্রাণীর কথোপকথনও শনাক্ত করার সম্ভাবনা দেখিয়েছে, যেগুলো এর আগে সিস্টেমের ডেটাসেটে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এই মডেলটি প্রশিক্ষিত হয়েছে মানব ভাষা, পরিবেশগত শব্দ এবং অন্যান্য তথ্যের ওপর। প্রকল্পটি ইতোমধ্যে কাজ এগিয়ে নিতে ১ কোটি ৭০ লাখ ডলারের অনুদান পেয়েছে।

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এআইয়ের ভূমিকা

সাম্প্রতিক অ্যাক্সিওস এআই+ সামিটে ন্যাচারএলএমের ডেমো প্রদর্শন করা হয়। সেখানেই প্রকল্পটির সিইও কেটি জাকারিয়ান বলেন, ‘আমরা বর্তমানে জীববৈচিত্র্য সংকটের মুখোমুখি। এই পরিস্থিতি প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্কহীনতার ফল। এআই এর মাধ্যমে প্রাণীদের ভাষা ডিকোড করতে পারলে আমরা প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ পুনঃস্থাপন করতে পারব।’

এআই এর চ্যালেঞ্জ

তবে প্রাণীদের ভাষা অনুবাদে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রাণীরা কীভাবে যোগাযোগ করে এবং তারা কী প্রকাশ করতে চায়, সে বিষয়ে মানুষের জ্ঞান এখনো সীমিত। উদাহরণস্বরূপ, গবেষকরা জানেন, পাখিরা গান ও সতর্ক সংকেত দিতে ভিন্ন শব্দ ব্যবহার করে। এছাড়া প্রেইরি ডগের মতো কিছু প্রাণী শিকারীদের বর্ণনা দিতে বিশেষ্য ও বিশেষণ ব্যবহার করে।

জেনারেটিভ এআই সাধারণ ভাষা অনুবাদে দক্ষ হলেও প্রাণীদের ভাষা রূপান্তরের ক্ষেত্রে এটি আরও গবেষণার দাবি রাখে।

জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় অন্য উদ্যোগ

ন্যাচারএলএম ছাড়াও মাইক্রোসফটের AI for Good ল্যাব SPARROW নামের একটি এআই সিস্টেম তৈরি করেছে, যা পৃথিবীর দূরবর্তী অঞ্চলে জীববৈচিত্র্য পরিমাপ করতে সক্ষম। এটি সোলার-পাওয়ারড ক্যামেরা ও শব্দ নিরীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে।

এআইয়ের ভবিষ্যৎ ও নৈতিক চ্যালেঞ্জ

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এর উচ্চ শক্তি চাহিদা বৈদ্যুতিক সিস্টেমের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। এ কারণে অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কার্বন নিরপেক্ষ পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে বাধ্য হচ্ছে।

জাকারিয়ান বলেন, ‘এটি এমন একটি চ্যালেঞ্জ, যা পুরো প্রযুক্তি ক্ষেত্রকে বিবেচনায় নিতে হবে। দায়িত্বশীল ব্যবহার ও নিরাপত্তার নৈতিক দিকগুলোও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

প্রযুক্তি ডেস্ক
+ posts

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত