অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সাবেক ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ ১১ জন সহযোগীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির জন্য আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তর। চলমান মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে এই আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গতকাল শনিবার ১৯ই এপ্রিল পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক এনায়েত হক সাগর জানান, তদন্ত বা মামলার অগ্রগতি অনুযায়ী প্রয়োজনে এই ধরনের আবেদন করা হয়ে থাকে। ইন্টারপোল রেড নোটিশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে পলাতক আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তারে সহায়তা করা হয়।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তিনি গত বছরের ৫ই আগস্ট দেশ ত্যাগ করেন। ফলে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের টানা ১৬ বছরের শাসনের পতন ঘটে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে গণহত্যা, দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহ, মানবতাবিরোধী অপরাধসহ শতাধিক অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যেই তার বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী ও দলের শীর্ষ নেতারা গ্রেফতার হয়েছেন কিংবা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আদালত, সরকারি আইনজীবী বা তদন্ত সংস্থার অনুরোধের ভিত্তিতেই এ ধরনের আন্তর্জাতিক সহায়তা চাওয়া হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি গত বছরের নভেম্বরেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আহ্বান জানান।
রেড নোটিশ জারি হলে ইন্টারপোল সদস্য রাষ্ট্রগুলো পলাতকদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনে তাদের গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট দেশের অনুরোধে প্রত্যার্পণ বা অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া চালাতে পারে।
এদিকে ভারতে অবস্থানকালেই এক অনলাইন সভায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে ভাষণে শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছিলেন, ইউনূস নেতৃত্বাধীন এই সরকার বাংলাদেশকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে।
এ ঘটনার পর সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলছেন, এই পদক্ষেপে দেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় আসতে পারে।
